Saturday, August 4, 2018

শিশুর দাঁতের যত্ন শুরু করবেন কখন থেকে

শিশুর দাঁতের যত্ন নিন ছোট থেকেই। ছবি : সংগৃহীত

দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা যদি না বোঝা যায় তাহলে পরে পস্তানো ছাড়া কিছু করার থাকে না। দাঁতের সমস্যা আমাদের দেশের শিশুদের অন্যতম প্রধান সমস্যা। শিশুদের দাঁতের যত্ন নিতে হয় শুরু থেকেই। তাদের যত্ন নেওয়া শেখাতে মা-বাবার ভূমিকাই বেশি থাকে।

অনেকেই প্রশ্ন করেন শিশুর দাঁতের যত্ন নিবেন কখন থেকে। দেখা যায়, ছয় মাস বয়স থেকে শিশুর দাঁত ওঠে। তবে গর্ভে থাকাকালীনই দাঁত উঠতে থাকে। দাঁতের মাড়ি ভেদ করে আসতে এ সময় লাগে। তাই দাঁত দেখা না গেলেও এর পরিচর্যা শুরু করতে হয় শুরু থেকেই।

শিশুকে প্রতিবার বুকের দুধ খাওয়ানোর পর কোমল কাপড় বা গজ দিয়ে মাড়ি ভালো করে পরিষ্কার করে দিন। এতে শিশু দাঁতে ক্ষয় রোগ থেকে রক্ষা পাবে। দাঁতে ক্ষয়রোগের কথা যখন এসেই গেল তখন এ নিয়ে কিছু বলতেই হয়। বেশির ভাগ শিশুর দেখা যায় দাঁতে কালো কালো দাগ পড়ে। দাঁতের কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যায়। পরে এ নষ্ট অংশ ভেঙে যায়। আবার দাঁতের মধ্যে গর্ত দেখা দেয়। গ্রামের বয়স্করা বলেন পোকায় দাঁত খেয়েছে। এ পোকায় দাঁত খাওয়াই দাঁতের ক্ষয়রোগ। গবেষণায় দেখা গেছে, ৮-১৫ বছরের শিশুদের ৫৩-৭৭ ভাগ এ রোগে ভোগে। সঠিক সময়ে যত্ন না নিলে এ রোগ থেকে দাঁতের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এটি প্রতিরোধ করা যায় সহজেই।

শিশুরা মিষ্টি জাতীয় খাবারের ভক্ত। অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবারই এমন হওয়ার মূল কারণ। মিষ্টি খেলে মুখে ব্যাকটেরিয়া হয় বেশি। নিয়মিত দাঁত ব্রাশ না করলে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা জমে যায়। এ খাদ্যকণা ও ব্যাকটেরিয়া দাঁতের চারপাশে প্লাক তৈরি করে। প্লাকের ব্যাকটেরিয়া মিষ্টি জাতীয় খাবারকে এসিডে পরিণত করে। ফলে দেখা দেয় দাঁতের ক্ষয়। এজন্য শিশুদের মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি খেতে দেবেন না।

চকলেট, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, পুডিং, মধু, জ্যাম-জেলি, কেকের ক্রিম, কোমলপানীয়, জুস কম খেতে দিতে হবে।

দাঁত ব্রাশের বিকল্প নেই। দাঁত বের হওয়ার সাথে সাথে শিশুর দাঁত ব্রাশ করা শুরু করতে হবে। তার মানে ছয় মাস বয়স থেকেই টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে ব্রাশ করতে হবে। অনেকে মনে করেন শিশু তো কিছু খায় না, তাই ব্রাশ করার প্রয়োজন নেই। এটা কিন্তু ঠিক নয়। ব্রাশ না করলে কিন্তু দাঁতের ক্ষয় হয়। মা-বাবাকেই ব্রাশ করিয়ে দিতে হবে। শিশুর ব্রাশ হবে ছোট। ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয়রোধ করে। তাই বলে বেশি পরিমাণে টুথপেস্ট দিবেন না। কারণ, এ ফ্লোরাইড আবার বেশি হলে দাঁতে হলদে ভাব দেখা দেয়। শিশুর ছোট টুথব্রাশের চার ভাগের তিনভাগ পরিমাণ টুথপেস্ট নিয়ে দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিন। শিশুর টুথব্রাশ অবশ্যই হতে হবে নরম,কোমল। তিনবছর বয়স পর্যন্ত এ পরিমাণ টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। এ সময়ের পর মটরশুটির দানার পরিমাণ টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। ব্রাশ করতে হবে দিনে কমপক্ষে ২ বার। রাতে খাবারের পর ও দিনে সকালের নাস্তার পর।

ঐতিহ্যগত ভাবে আমরা সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করি। এতে কোনো ভালো ফল পাওয়া যায় না। রাতে খাবারের পর খাদ্যকণা জমে থাকলে তাতে সহজেই ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে দাঁত ক্ষয় করতে পারে। শিশুকেও এভাবেই ব্রাশ করা শেখান। ব্রাশ করতে হয় ১-২ মিনিট। সব দাঁতে যেন ব্রাশ পৌঁছে সেদিকে খেয়াল রাখুন। ব্রাশ করুন ওপর ও নিচে। ব্রাশে উল্টো পিঠ দিয়ে জিহ্বা ও তালু পরিষ্কার করুন। অনেক শিশু টুথপেস্ট গিলে ফেলে। এটা কিন্তু ভালো নয়। দাঁত ব্রাশ হয়ে গেলে অতিরিক্ত টুথপেস্ট কুলকুচি করে ফেলে দেওয়া শেখান। শিশু ঠিকমতো দাঁত ব্রাশ করছে কি না তা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন।

অনেকে একই টুথপেস্ট বছরের পর বছর ব্যবহার করেন। তা না করে বিভিন্ন কম্পানির টুথপেস্ট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্যবহার করুন। এক টুথব্রাশ ২-৩ মাসের বেশি ব্যবহার না করাই ভালো। অনেক শিশুর দাঁতে হলদে ভাব দেখা যায়। বিভিন্ন ওষুধ ও অতিরিক্ত ফ্লোরাইডের কারণে তা হয়। গর্ভস্থ মা টেট্রাসাইক্লিন সেবন থেকে বিরত থাকুন।

দন্ত্য চিকিৎসককে দাঁত দেখানোর কথা আমরা বেমালুম ভুলে যাই। আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে প্রথম জন্মদিনের আগেই শিশুকে দন্ত্য চিকিৎসককে দেখাতে হবে। এরপর বছরে অন্তত দুই বার দন্ত্য চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। দাঁতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে যেমন দাঁতে ব্যথা, কালচে বা হলুদ ভাব তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।

দাঁতের ৩টি সমস্যা ও প্রতিরোধের সহজ উপায়


আপনার মুখের সৌন্দর্যকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় একটুকরো সুন্দর হাসি। তবে সুন্দর হাসির অধিকারী হতে গেলে দাঁতের নিয়মিত যত্ন নিতে হবে অবশ্যই। নিয়মিত যত্ন না নিলে দেখা দিতে পারে দাঁতে ক্যাভিটি, মুখের আলসার, এমনকি মুখের ক্যানসারও। তাই দাঁত, মাড়ি বা মুখের ভেতরের যে কোনও ছোট বড় সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। সময়মত চিকিৎসা না করালে বা নিয়মিত দাঁতের যত্ন না নিলে আপনার মুখের সুন্দর হাসি মলিন হতে সময় লাগবে না বিশেষ। আসুন, আজ জেনে নেই দাঁতের কিছু সাধারন সমস্যা ও দাঁতের যত্ন সম্পকে।

দাঁতের কিছু সাধারন সমস্যাঃ
আমাদের দাঁতে সাধারণত তিন ধরনের সমস্যা দেখা যায়- ১) নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ ২) মাড়ি থেকে রক্ত ৩) দাঁতে ক্যাভিটি ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ না করলে মাড়িতে খাদ্য কনা জমে থাকে,ফলে দাঁতের এই সাধারন সমস্যাগুলো দেখা দেয়। আমাদের মুখের ব্যাকটেরিয়া খাবার খাওয়ার পর প্লাক তৈরি করে। যাদের দাঁত আঁকাবাঁকা তাদের দাঁতে প্লাক জমার পরিমান আরও বেশি হয়। এছাড়া অধিক পরিমানে মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে মুখের ভেতর থাকা ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের অ্যাসিড তৈরি করে। এর কারনে দাঁতে ক্যাভিটি দেখা দেয়। এই ক্যাভিটি যখন বাড়তে বাড়তে নার্ভে গিয়ে পৌছায়, তখনই দাঁতের গোঁড়ায় অসহ্য ব্যথা শুরু হবে। অনেক সময় আমাদের দাঁতের ছোট্ট কিছু অংশ ভেঙ্গে যায়। সেই ভাঙ্গা দাঁতের থেকে মুখে বা জিভের কোন জায়গায় বারবার ঘষা লাগলে সেটি থেকে মুখে আলসার দেখা দিতে পারে। মনে রাখবেন, এই ধরনের সমস্যা অবহেলা করলে ভবিষ্যতে ক্যানসার হবার সমূহ সম্ভাবনা।
প্রতিরোধের উপায়-
-দিনে কমপক্ষে ২ বার মাঝারি ব্রিসলের ব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজতে হবে। একবার সকালে নাস্তার পরে ও আরেকবার রাতে ঘুমের পূর্বে। রাতে ব্রাশ করার পর আর কিছু খাবেন না।
-তিন মাস অন্তর অন্তর ব্রাশ বদল করতে হবে।
-নিয়মিত দাঁত ফ্লস করুন, এতে করে দাঁতে খাদ্য কণা আটকে থাকবে না।
-যেসব খাবার ও পানীয়তে চিনির পরিমান বেশি থাকে সেগুলো খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মিষ্টি খাবার খাওয়া হলে ভালো করে কুলি করে নিন। এছাড়া যেসব পানীয়তে অ্যাসিডের পরিমান বেশি থাকে সেগুলো কম খাওয়াই ভালো। যেমন- কোল্ড ড্রিংকস, প্যাকেটজাত জুস। এতে দাঁতের ক্ষয় কম হবে।
-রশুন দাঁতের জন্য দারুন উপকারী। রশুন দাঁতের ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। খাদ্য তালিকায় নিয়মিত কাঁচা রসুন বা রসুনের আচার রাখতে পারেন।

-ধূমপান করা থেকে বিরত থাকুন। কারন ধূমপানের ফলে দাঁতে দাগ ও মুখে বাজে গন্ধের সৃষ্টি হয়। এছাড়া মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণও হলো ধূমপান।
-পান মশলা ও সুপারি থেকেও ঠোঁটের ও জিভের ক্যানসার হত পারে ।এইজন্য এইগুলো খাবার অভ্যাস পুরোপুরি ত্যাগ করুন ।
-দাঁত ব্রাশ করার সময় মাড়ি থেকে সহজেই রক্ত বের হলে এখনই সচেতন হন ও ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সমস্যা বেশি বাড়ার আগেই চিকিৎসা করিয়ে নেয়া ভালো।
-মুখের ভেতরে সাদা বা লাল রঙের ক্ষত দেখা দিলে দেরী না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এইরকম কোনো লক্ষন থাকলে আপনার মুখে আলসার আছে কিনা তা একমাত্র চিকিৎসকই বলতে পারবেন।
-দাঁতের সমস্যা প্রতিরোধ করার সব চাইতে ভালো উপায় হলো নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।

দাঁতের যত্ন: দশটি সতর্কতা


১.সঠিক টুথব্রাশ বাছাই করুন: যে টুথব্রাশটির উপরের শলাকাগুলো অতিরিক্ত শক্ত নয় আবার নরমও নয় অথচ ব্রাশের হেন্ডেল হাতের আঙ্গুল দিয়ে ধরার জন্য যথেষ্ট সুবিধাজনক এবং মুখের সকল দাঁতের অবস্থান অর্থাত্ দাঁতের উপর নীচ এবং ভিতরে বাহিরে সহজে আনা নেয়া করা যায় সেরকম টুথব্রাশ বেশী কার্যকর। খেয়াল রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত শক্ত ব্রাশ আপনার নরম মাড়িকে আঘাত না করতে পারে। তাছাড়া আজকাল ইলেকট্রনিক ব্রাশও ব্যবহার করা নিরাপদ। ইলেকট্রনিক ব্রাশের সাহায্যে অতি সহজে দাঁতের সকল এলাকা বা স্থান থেকে খাদ্য কণা দূর করা যায়। তবে যাদের হাতে, কনুই বা ঘাড়ে আথ্রাইটিস আছে তাদের জন্য ইলেকট্রনিক ব্রাশ নিরাপদ অথবা যাদের হাত দিয়ে ভালোভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে সমস্যা হয় তাঁদের জন্যও ইলেকট্রনিক ব্রাশ নির্ভরযোগ্য একটি মাধ্যম। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা ইলেকট্রনিক ব্রাশ ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করছেন।

২. কতটুকু সময়: আপনি কি সময়মত দাঁত ব্রাশ করেন, বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রতিদিন দুই বেলা ব্রাশ করা প্রয়োজন তবে তিনবার করতে পারলে অতি উত্তম। দাঁত ব্রাশের জন্য দুই মিনিটই যথেষ্ট সময়। মুখের ভিতরে বিভিন্ন স্থানকে ৪টি স্তরে ভাগ করা যায় যেমন ডান দিকের উপরে নীচে এবং বাম দিকের উপরে নীচে এবং প্রতি স্তরের জন্য ৩০ সেকেন্ড সময় নির্ধারণ করা যায়। অনেকে টিভি দেখতে দেখতে বা গল্প করতে করতে বা অন্য কিছু কাজে সময় ব্যয় করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষন দাঁত ব্রাশ করেন তাদের মধ্যে বেশীর ভাগেরই এনামেল ক্ষয় হয়ে এরোসন বা এট্রিশন হতে পারে এবং দাঁত অতি সংবেদনশীল হয়ে ঠান্ডা পানি বা গরম চা তে দাঁত

শিরশির করতে পারে। এক্ষেত্রে বিশেষ এক ধরণের টুথ পেইস্ট এবং  ডেন্টাল ফিলিং প্রয়োজন হয়।

৩. অতিরিক্ত ঘষাঘষি বা শক্তভাবে ব্রাশ না করা: দেখা গেছে অনেকে ভেবে থাকেন যে জোরে জোরে এবং শক্তভাবে ব্রাশ দিয়ে দাঁত ঘষলে তাড়াতাড়ি ময়লা দূর হয় ,দাঁত ধবধবে সাদা হয়। আসলে কিন্তু তা নয় এই অতিরিক্ত ঘষাঘষির ফলে দাঁতের ক্ষয় হয় এবং এনামেল উঠে যায় অনেকক্ষেত্রে মাড়িও ক্ষয় হয়। তাই খুব ধীরে ধীরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দাঁত ব্রাশটিকে সবদিকে নিতে হবে। যেন দাঁতের কোনো অংশ বাদ না পড়ে।

৪. সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার:বিশেষজ্ঞরা বলছেন দাঁত ব্রাশটিকে প্রথমে মাড়ির থেকে ৪৫ ডিগ্রী এংগেলে বা কোনাকুনি বসিয়ে সকল জায়গায় ব্রাশ করতে হবে। দাঁত ব্রাশ দাঁতের বাহিরের অংশ এবং ভিতর দিককার অংশ এবং সেই সাথে  জিহ্বার উপরিভাগও ব্রাশ করতে হবে, সত্যি কথা হলো ,দাঁতের কোনো স্থানেই এমনকি জিহ্বাতেও যেনো খাদ্যকণা লেগে না থাকে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

৫. মাঝে মাঝে দাঁত ব্রাশ এর শুরুটা পরিবর্তন করুন: আপনি কি সবসময় একই জায়গা থেকে দাঁত ব্রাশ শুরু করেন। আমরা কিন্তু অনেকেই তা করি। সেটা না করে আমরা যদি প্রতিদিন উপরের পাটি থেকে শুরু না করে ভিন্ন সময় ভিন্ন স্থান থেকে ব্রাশ করি তবে অনেক উপকার পাওয়া যায় যেমন আজ আমি উপরের পাটি থেকে শুরু না করে ভিতরের পাটি থেকে ব্রাশ শুরু করতে পারি এবং সামনের পাটির দাঁত ব্রাশ দিয়ে শেষ করতে পারি তাতে অভ্যাস পরিবর্তনের সাথে সাথে সাথে অনেক বেশি কার্যকর পদ্ধতি হতে পারে।

৬. কোন ধরণের টুথটেস্ট ব্যবহার করবেন: অনেক সময় আমরা টিভি বা রেডিও বিজ্ঞাপন শুনে বা দেখে টুথপেস্ট ব্যবহার করি এবং বলা হয় এগুলো দাঁতকে অনেক ঝকঝকে  সাদা করে বা অনেক শিরশির দাঁতকে ভাল করে ইত্যাদি নানা বিজ্ঞাপন। কিন্তু,আসলে কি সব সত্যই তাই, আপনার ডেন্টিস্ট এর কাছে জেনে নিন কোন টুথ পেস্ট আপনার জন্য ভালো। কারণ দাঁত শিরশির করার জন্য ব্যবহূত টুথ পেস্ট দীর্ঘদিন ব্যবহারে ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশী। সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে যেকোন ফ্লুরাইড মিশ্রিত টুথপেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করা, তবে কয়লা, পাউডার ইত্যাদি উপাদান দাঁতের জন্য ক্ষতিকর  হতে পারে।

৭. অতিরিক্ত সফট ড্রিংকস দাঁতের জন্য ক্ষতিকর: অনেক ধরণের এনার্জি ড্রিংকস, ডায়েট সোডা বা চকলেট টফি এমনকি স্বাস্থ্যকর পানীয় যেমন আপেল, অরেঞ্জ জুস এবং কফি আপনার দাঁতের এনামেলকে সহজেই ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। তাই এই জাতীয় খাবার পর দাঁত ব্রাশ করা জরুরী। কারণ টক জাতীয় খাবার দাঁতের এনামেলকে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে।

৮. ব্রাশ পরিষ্কার রাখুন: আপনি কি দাঁত ব্রাশের পরে ব্রাশটিকে ভালোভাবে ধুয়ে মুছে রাখেন। ব্রাশটিকে অবশ্যই পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে শুকিয়ে রাখতে হবে। কারণ আপনার মুখের ভিতরের খাদ্যকণা, ময়লা কিন্তু ব্রাশের সাথেই লেগে থাকে এবং পরের দিন কিন্তু সেই ময়লা বা পঁচা খাদ্যকণা দিয়েই আপনি দাঁত ব্রাশ করছেন। সুতরাং আপনার টুথব্রাশটিকেও ভালোভাবে পরিষ্কার করার পরে একটি জীবাণুনাশক ওষুধ দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে রাখবেন। তাতে আপনি মাড়িকে ও দাঁতকে সুস্থ রাখতে বেশী সক্ষম হবেন।

৯. টুথ ব্রাশটিকে কখনোই বাথরুমে রাখবে না: আমরা অনেক সময় টুথব্রাশটিকে বাথরুমে খোলা ভাবেই রেখে দেই যেটা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ব্রাশটিকে সবসময় একটি কৌটোর মধ্যে রাখবেন যদি সেটাকে খোলা রাখেন তবে বাথরুমের সকল ধরণের জীবানু আপনার টুথব্রাশে আশ্রয় নিতে পারে যা মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। আবার অন্যদিকে একজনের ব্রাশ আরেকজনের ব্রাশের সাথে একটি কৌটায় কখনো রাখবেন না। তাতেও জীবাণু ছড়াতে পারে। ব্রাশ সবসময় শুকনো জায়গায় রাখবেন। কারণ ভিজে বা পানিযুক্ত ব্রাশে জীবাণু তাড়াতাড়ি আশ্রয় নেয়।

১০. কতদিন ব্রাশ ব্যবহার করবেন: আমেরিকান ডেন্টাল এসোাসিয়েশন এর মতে, একটি ব্রাশ তিন থেকে চার মাস ব্যবহার করাই নিরাপদ। আপনি ব্রাশের শলাকাগুলোর দিকে খেয়াল করুন যখনই শলাকাগুলো নুইয়ে পড়বে বা বাঁকা হয়ে যাবে তখনই ব্রাশটিকে বদলাতে হবে। কারণ বাঁকা শলাকার টুথব্রাশ সঠিকভাবে খাদ্যকণা পরিষ্কার করতে পারে না।