Friday, July 27, 2018

দাঁত আঁকাবাঁকা হলে কি করবো?

সুন্দর হাসির পূর্ব শর্ত হলো সুন্দর দাত। তাই আমরা সবাই চাই ঝকঝকে মুক্তার মতো দাত । কিন্তু প্রায়ই দেখা যায় আঁকাবাঁকা, ফাঁকা ও উঁচু নিচু দাঁতের কারণে অনেকে নিজেকে কিছুটা লুকিয়ে রাখেন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রাণ খুলে হাসতে পারেন না। অথচ অসচেতনতার কারণে দাঁতের এমন সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

যেমন নির্দিষ্ট বয়সের আগে দুধদাঁত ফেলে দেয়া অথবা দীর্ঘদিন পর্যন্ত রেখে দেয়া, অতিরিক্ত কোনো দাঁত থেকে যাওয়া বা কোনো দাঁত কম থাকা, শিশুদের আঙুল চোষার অভ্যাস থাকা এবং নাকের পরিবর্তে মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়া। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য এ সমস্যায় ব্যক্তির নিজস্ব হাত থাকে না। যেমন দাঁতের আকার চোয়ালের তুলনায় বড় বা ছোট হওয়া, দাঁত ও তার চারপাশের মধ্যে ভারসাম্য না থাকা, মুখের মধ্যে কোনো টিউমার বা সিস্ট থাকা ইত্যাদি। কখনো কখনো বংশগত কারণেও দাঁত এলোমেলো হয়ে থাকে।


আঁকাবাঁকা দাঁতে ক্ষেত্রে বিশেষভাবে যত্নবান হতে হয়, অন্যথায় মাড়ি প্রদাহ, ডেন্টাল কেরিজ, দাঁতে অতিরিক্ত প্লাক জমাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আঁকাবাঁকা দাঁতের যত্নে ডেন্টাল সার্জন মোহাম্মদ আলী আজগর কিছু পরামর্শ দেন।


দাঁত আঁকাবাঁকা হলে কি করবো

আসুন জেনে নেয়া যাক কীভাবে আঁকাবাঁকা দাঁতের যত্ন নেবেন—


১. নিয়মিত দাঁত মাজার পর একটি সাদা কাপড় দিয়ে আপনার আঁকাবাঁকা দাঁতগুলো ঘষে নিন। এতে দাঁতের বাড়তি ময়লা দূর হবে এবং বাঁকা দাঁত খুব একটা দৃষ্টিকটু দেখাবে না।

২. শর্করা ও চর্বিজাতীয় খাবার দাঁতের ফাঁকে জমে দাঁত দ্রুত ক্ষয় করে এবং এর মসৃণতা নষ্ট করে। তাই এসব খাবার গ্রহণের পর সঙ্গে সঙ্গে ব্রাশ করুন। ভালোভাবে কুলি করে দাঁত পরিষ্কার করে নিন।

৩. ওপর-নিচে, ভেতর ও বাইরে সব দিকে পরিষ্কার করুন। বাঁকা দাঁতে ময়লা বেশি জমে। তাই একটু সময় নিয়ে ব্রাশ করুন।

৪. অনেক সময় একই স্থানে দুটি দাঁত গজায়, সেক্ষেত্রে ডেন্টিস্টের পরামর্শ অনুযায়ী একটি দাঁত তুলে ফেলুন। অনেকের দুটি দাঁতের মাঝে ফাঁকা স্থান বা ভাঙা দাঁত থাকে। এক্ষেত্রেও যত দ্রুত সম্ভব চিকিত্সকের দ্বারস্থ হওয়া ভালো।
৫. শিশুদের ক্ষেত্রে দাঁত ওঠার শুরু থেকেই সতর্ক হোন, বোতলে দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন এবং ভালোভাবে দাঁত ব্রাশ করা শেখান।


৬. দুধদাঁতে প্রক্সিমাল ক্যারিজ হলে দ্রুত চিকিত্সা করান।

এই তো গেলো আঁকাবাঁকা দাতের যত্নের বিষয়, তবে বর্তমানে বিভিন্ন ডেন্টাল ক্লিনিকগুলোতে দাত সোজা করার জন্য বিভিন্ন আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। ব্রেস পরানো, ডেন্টাল রিফর্মেশন ইত্যাদি নানা পদ্ধতি এখানে সুলভে পাওয়া যায়। এগুলো সম্বন্ধে আরো জানতে আপনার নিকটস্থ ডেন্টাল ক্লিনিকে যোগাযোগ করতে পারেন।

দাঁতের সুরক্ষায় খাদ্যের ভুমিকা

একটা সুন্দর হাসি যেকোনো পরিস্থিতি বদলে দেয় সহজেই। কিন্তু মুক্তো ঝরা হাসি পাওয়া যায় কেবল চকচকে সাদা দাঁত থেকেই। অনেকেই দাঁত সাদা করতে চান কিন্তু বুঝতে পারেননা কী করবেন। এই লেখাটি আপনাদের কিছুটা সাহায্য করতে সক্ষম হলে আনন্দিত হব।
আমাদের দেশে দাঁতের যত্নে অনেকের কাছেই অনেক ধরনের টিপস বা টোটকা পাওয়া যায়। অনেকেই বলেন যে,প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলেই দাঁত ভাল থাকে। আবার অনেকেই বলেন আখ চিবিয়ে খেতে। আবার অনেকেই বলেন শক্ত বাদাম-বুট ইত্যাদি  খেতে কিংবা যত ধরনের শক্ত খাবার আছে সেগুলো খেতে। বস্তুত এসব কথার বৈজ্ঞানিক কোন ভিত্তি নেই। বরং অনেকক্ষেত্রেই উল্টো ফল হয়। তাই ভালোভাবে জানা দরকার দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো।

দাঁত ভালো রাখতে খাবারের ভূমিকা সর্বাগ্রে গণ্য। তাই কোন কোন খাবার দাঁত ভালো রাখতে দরকার তা এক নজরে দেখা যাক।
কোন কোন খাবারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং এড়িয়ে চলবেন – জেনে নিনঃ

১.কমলা, আনারস এবং অনান্য টক ফল বা এর রস অর্থাৎ জুসে প্রচুর এসিড থাকে যা  দাঁতের জন্য অপকারী।কারন এটি দাঁতের শক্ত এনামেল ক্ষয় করে। তাই এই ধরনের ফল গুলো খাওয়ার সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।জুস স্ট্র দিয়ে খেতে হবে।খাওয়া শেষে ভালো ভাবে কুল কুচি কিংবা ব্রাশ করতে হবে।নইলে এসিডের প্রভাবে দাঁতের এনামেল ধীরে ধীরে ক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যাবে।অকালেই হারাতে হবে দাঁত কিংবা দাঁতের স্বভাবজাত সাদা রঙ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাবে।

২.আমাদের অনেকের ই অভ্যাস আছে যে গরম গরম খাবারের সাথে কোন ঠান্ডা কোমল পানীয় না হলে চলেই না।কিন্তু আমরা বুঝতেই পারিনা যে এর মাধ্যমে আমরা আমাদের দাঁতের কত বড় ক্ষতি করে ফেলছি।যখন ই চুলা থেকে নামানো খাবার খাই আমরা তখন এম্নিতেই আমাদের  দাঁতের এনামেল প্রসারিত হওয়া শুরু করে।আর এত গরম খাওয়ার ফলে আমাদের পাকস্থলীর উপর চাপ পড়ে তা প্রসারিত হয় এবং কিছুক্ষেত্রে এটি পেটের পেশি বাড়িয়ে ভুড়ি তৈরি করে।আবার অতিরিক্ত গরম খাবার পাকস্থলীতে নানা ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার বংশ বৃদ্ধি করে এমনকি  এর ফলে ক্যান্সার ও হতে পারে।

আর এর সাথে তো ঠাণ্ডা পানীয় খেলে আর কথাই নেই।প্রসারিত এনামেল আবার সংকুচিত হয়।এমন উপর্যুপরি সংকোচন ও প্রসারনে তখন দাঁতের এনামেল যায় ফেটে। এতে এক সূক্ষ্ম ফাটল সৃষ্টি হয় যা চুলের চেয়েও বেশি  সূক্ষ্ম।ফলে এনামেল ক্ষয় হয়ে ক্যাভিটি বা দাঁতে সূক্ষ্ম কিছু গর্ত সৃষ্টি হয়।

আর এই ঠাণ্ডা পানীয়ের ই তো রয়েছে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব। অর্থাৎ এই পানীয় গুলো আমাদের পাকস্থলীতে অবস্থিত উপকারী ব্যাক্টেরিয়াগুলো ধ্বংস করে হজম শক্তি নষ্ট করে, ক্ষুধা নষ্ট করে।এছাড়া ডায়াবেটিস হওয়ার আশংকাও বাড়িয়ে দেয় এটি। খুব কম সময়ে এটি দেহের ওজন বাড়িয়ে স্থূলতা তৈরি করে।তাই অতিরিক্ত গরম বা ঠাণ্ডা খাবার না খাওয়া ই উত্তম আর দুটোই মিলিয়ে খাওয়া তো একেবারেই অনুচিত।

৩.চিনিযুক্ত যেকোনো পানীয় দাঁতের ক্ষতি করে।দাঁতে থাকা ময়লার সাথে ও জীবাণুর সাথে বিক্রিয়া করে এসিড তৈরি করে এনামেল ক্ষয় করে।তাই খাওয়ার পরপর ব্রাশ করে ফেলাই সবচেয়ে ভাল সমাধান।তৈরি এসিড এর ফলে এনামেল নষ্ট হয়ে দাঁতে সমস্যা সৃষ্টি হয়।তাই সাধারণ তাপমাত্রার পানি বা সাধারণ দুধই হল পানীয় হিসেবে সবচেয়ে কার্যকরী।

৪.আঠালো ও চিনিযুক্ত খাবার যেমন ললি পপ,ক্যান্ডি,কেক,পেস্ট্রি  ইত্যাদি দাঁতের ক্ষতি করে।অতিরিক্ত চা-কফি দাঁতের স্বাভাবিক রঙ কে নষ্ট করে দেয়। এছাড়া ও এগুলোতে অতিমাত্রায় ক্যাফেইন থাকে যে গুলো আমাদের দেহে স্নায়বিক সমস্যা সৃষ্টি করে।

৫.মচমচে ও ভংগুর খাদ্য খেলে দাঁতের ফাঁকেফাঁকে আটকে থাকে।ফলে দাঁতের অনেক ক্ষতি হয়।যেমন -চিপস জাতীয় খাবার। বরফকনা ও দাঁতের অনেক ক্ষতি করে।

Tuesday, July 24, 2018

দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যা করনীয় :


     
 
১/ প্রতিদিন সকালে নাস্তা করার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে সঠিকভাবে ব্রাশ করে ঘুমান ।

  ২/ কয়লা, ছাই, লবন, টুথপাউডার দাঁতের মাজন হিসাবে ব্যবহার করলে দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি হয় ।

  ৩/ পান, সুপারি, জর্দা, গুল, তামাক, সিগারেট মুখের ক্যানসারের অন্যতম প্রধান কারন । এসব সেবন থেকে দুরে থাকুন ।

  ৪/ চকোলেট, আইসক্রিম, কোল্ড ড্রিংকস, মিষ্টি, পাউরুটি/ বিস্কিট, কেক এবং চিপস খাওয়ার পরপরই দাঁত ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে ।

  ৫/ প্রতি দুই মাস পর পর টুথব্রাশ পরিবতন করুন । কেননা ব্রাশের ব্রিসল বেকে গেলে মাড়ির রোগ হয় ।

  ৬/ প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর ডেন্টাল চিকিৎসক দ্বারা মুখ ও দাত পরিক্ষা করান ।

Monday, July 23, 2018

দাঁতের স্বাস্থ্য বিষয়ে প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নঃ সকালে ঘুম থেকে উঠে জিহবা দিয়ে থুথু টান দিলে রক্ত বের হয়, আর ব্রাশ করলেও রক্ত বের হয়। এটার প্রতিকার কি?
উত্তরঃ দাঁত থেকে এভাবে রক্ত পড়ার সবচেয়ে বড় কারণ হতে পারে মাড়ির প্রদাহ, যার নাম - জিন্জিভাইটিস্। দাঁতের গোড়ায় অনেক দিন খাবার এবং টার্টার জমার ফলাফল হল এই রক্ত পরা। দিনে ২ বার ব্রাশিং, অন্তত একবেলা ফ্লসিং ও মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা দরকার। শক্ত ও অনেক পুরানো টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজলেও তা রক্ত পরার কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে প্রফেশনাল ডেন্টিস্ট - স্কেলিং ও কিউরেট করে মাড়ি থেকে টার্টার ও কাল্কুলাস সরিয়ে মাড়ির প্রদাহ দুর করেন।



প্রশ্নঃ ঠাণ্ডা কিছু খেতে পারিনা। দাঁত শিরশির করে। কেন?
উত্তরঃ দাঁত শিরশির করার কারন হতে পারে দাঁত ক্ষয় অথবা দাঁতের গোরা থেকে মাড়ি সরে যাওয়া অথবা দুটোই। অনেকের সুপারি বা অন্য শক্ত খাবার যাকে বলে ‘কোরস্ ফুড’ খাবার অভ্যাস থাকে। দীর্ঘ দিনের এই অভ্যাসে দাঁত ক্ষয় হয়ে শিরশির অনুভূতি হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে জিন্জিভাইটিস্ থেকে বা শক্ত টুথব্রাশ ব্যাবহারের কারনে দাঁতের গোরা থেকে মাড়ি সরে যেতে পারে। এটাও দাঁত শিরশির করার কারন। এক্ষেত্রে প্রফেশনাল ডেন্টিস্ট - স্কেলিং ও ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতে ফিলিং করে শিরশির অনুভূতি হওয়া দুর করেন।



প্রশ্নঃ ঠাণ্ডা কিছু খেতে পারিনা। দাঁত শিরশির করে। কেন?
উত্তরঃ দাঁত শিরশির করার কারন হতে পারে দাঁত ক্ষয় অথবা দাঁতের গোরা থেকে মাড়ি সরে যাওয়া অথবা দুটোই। অনেকের সুপারি বা অন্য শক্ত খাবার যাকে বলে ‘কোরস্ ফুড’ খাবার অভ্যাস থাকে। দীর্ঘ দিনের এই অভ্যাসে দাঁত ক্ষয় হয়ে শিরশির অনুভূতি হতে পারে। কারো ক্ষেত্রে জিন্জিভাইটিস্ থেকে বা শক্ত টুথব্রাশ ব্যাবহারের কারনে দাঁতের গোরা থেকে মাড়ি সরে যেতে পারে। এটাও দাঁত শিরশির করার কারন। এক্ষেত্রে প্রফেশনাল ডেন্টিস্ট - স্কেলিং ও ক্ষয়ে যাওয়া দাঁতে ফিলিং করে শিরশির অনুভূতি হওয়া দুর করেন।